কিছু প্রশ্ন ? উত্তর আছে আপনার কাছে ?
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
নিজেকে করার কিছু প্রশ্ন , যদি পারেন তো জবাব দিন , না পারলে আল্লাহর দিকে ফিরে আসুনঃ
১/ আপনি শুধু জুমআ’র নামাজই পড়েন কেন? আপনাকে কি আল্লাহ্ শুধু জুমার দিনেই আলো, বাতাস, পানি খাবার দিয়ে থাকেন? শনিবার দেন না? রবি, সোম, মঙ্গল সব দিনই তো দেন, সবদিন পরিপূর্ণ আল্লাহর নেয়মত ভোগ করেন, কিন্তু আল্লাহ্কে শুধু একদিনই স্মরণ করেন। এবার বলুন আপনি কি ঠিক পথে আছেন? এটা কি স্পষ্টত অপরাধ নয়? জবাব দিন , না হলে ফিরে আসুন।
২/ আপনি কি মনে করেন ইসলাম শুধু মসজিদ , মাদ্রাসায় , ইমাম, আলেমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ? সবার জন্য জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কি ইসলাম নয়? তাহলে আমাদের প্রিয় নবীর জীবনের প্রতিটি অংশই কেন ইসলাম জড়িত, কিংবা সাহাবীরা/৪ খলিফা কেনইবা ইসলামিক জীবন যাপন করেছেন? এবার নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি নিজেকেই ধোঁকা দিচ্ছেন না? জবাব দিন, না হলে ফিরে আসুন।
৩/ আপনি জানেন নামাজ পড়া ফরজ, আপনি এও জানেন নামাজ না পড়লে জাহান্নামে যেতে হবে, আপনার এটাও জানা আছে যে জাহান্নাম অত্যন্ত ভয়াবহ, দুনিয়ার কোন শাস্তিই জাহান্নামের ধারে কাছেও নেই, তবু কেন আপনি পড়ছেন না? আপনি কি জেনে বুঝে নিকৃষ্ট জায়গায় , ভয়াবহ শাস্তির জায়গায় ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন না? কেউ যদি জেনে বুঝে শাস্তি পেতে চায়, অথচ সে ইচ্ছা করলে শাস্তির বদলে চির সুখের স্থান পেতে পারে তাকে আপনি কি বলবেন ? চরম দুর্ভাগা বলবেন না? জবাব দিন , না হলে ফিরে আসুন।
৪/ আপনি তো জানেন জান্নাতে আরাম আয়েশের অভাব নেই। ইচ্ছা মত ভাল ভাল খাবার, পরমা সুন্দরী জান্নাতি হুর, যা যা ইছে করে সব পাওয়া যাবে জান্নাতে গেলে। দুনিয়ায় মানুষ কদিন বাঁচে? ৮০/১০০ বছর?আর আখিরাতের জীবন তো অনন্ত অসীম। আপনি এই ৮০-১০০ বছর আরামে কাটিয়ে দিতে চান আর অনন্ত জীবন ছেড়ে দিতে চান? এর থেকে বোকামি আর কি হতে পারে?
৫/ আপনি সবই মানেন সবই বোঝেন, কিন্তু অলসতা কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে পালন করেন না, কি করে আশা করেন জান্নাত পাওয়ার। অনেকে বলেন ভাই আমি তো জাহান্নামী, তাদেরকে বলতে ইচ্ছে করে ভাই জাহান্নামকে আপনি কি মনে করেন? সাধারন জেলখানা ? তাহলে শুনুন
নু’মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ
“কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তির শাস্তি হবে এই যে, তার দুই পায়ের তালুর নিচে আগুনের দু’টি অংগার রাখা হবে এবং তাতে তার মস্তিষ্ক সিদ্ধ হতে থাকবে। সে মনে করবে, তার চাইতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি আর কেউ হয়নি। অথচ সে-ই জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে হালকা শাস্তিপ্রাপ্ত।”
[ বুখারী: ৬৫৬২ , মুসলিম: ২১৩ ]
জবাব দিন , নাহলে ফিরে আসুন। যারা ফিরে আসবে এই মুহূর্ত থেকে তাদের জন্য আল্লাহ্ সুসংবাদ দিয়েছেন,
“আর যারা খারাপ কাজ করে, তারপরে তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসে, তবে নিশ্চয়ই তোমার রব এরপরও ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।” [ সূরা আ’রাফ ১৫৩]
“তারা কি দেখে না,তারা প্রতি বছর একবার কিংবা দুবার বিপদগ্রস্ত হয়? এরপরও তারা তওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না।” [ সূরা তাওবা ১২৬]
“সুতরাং তারা কি আল্লাহর নিকট তওবা করবে না? এবং তার নিকট ক্ষমা চাইবে না? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।” [সূরা মায়েদা ৭৪]
যারা ভাবে এখন পাপ করি পরে সময়মত তওবা করে নেব, তাদের সাধারণতঃ কোনদিনই তওবা করার সৌভাগ্য পাবে না।
আল্লাহ্ বলেন,
“আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।” [সূরা নিসা ১৮]
তাই আমার ভাই ও বোনেরা ফিরে আসুন , এখনই, এখনই এবং এখনই। তওবা করে ফিরে আসুন। আল্লাহর কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করুন।
মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। উদ্দেশ্য হ’ল, তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ ‘আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। তিনি অন্যত্র বলেন, لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوْحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ إِنِّيْ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ- ‘আমরা তো নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্প্রদায়ের নিকটে এবং সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ নেই। আমি তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করছি’ (আ‘রাফ ৭/৫৯)।
এই আহবান শুধুমাত্র নূহ (আঃ)-ই তাঁর কওমকে করেননি। বরং আল্লাহ প্রেরিত প্রত্যেক নবী-রাসূলই তাদের কওমকে আল্লাহর ইবাদত করার আহবান জানিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُوْلٍ إِلاَّ نُوحِيْ إِلَيْهِ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُوْنِ- ‘(হে মুহাম্মাদ!) আমরা তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি যার প্রতি আমরা এই অহী অবতরণ করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর’ (আম্বিয়া ২১/২৫)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ ‘তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর’ (হিজর ১৫/৯৯। অতএব আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে একমাত্র তাঁর ইবাদত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। সে উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করা সকল মানুষের উপর ওয়াজিব।
‘রোজা’
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মাস কোনটি যদি প্রশ্ন করা হয়, যেকোন মুসলিমই একই উত্তর দেবেন। রামাদান। যে ব্যক্তির ইসলাম সম্পর্কে সামান্যতম ধারণা আছে, তিনিও বলতে পারেন এই মাস পবিত্র। এই মাস ফযিলতের।
কিন্তু তবুও কিছু একটা জানি আমাদের বেঁধে রাখছে এই মাসের ফযিলত থেকে। কিছু একটা আমাদের আমাদের ছুটতে দিচ্ছে না এই মাসের অসীম রহমত সুধা পানের দিকে। কি সেটা?
আমাদের সদিচ্ছার অভাব। আমাদের মূর্খতা। আমাদের নির্বুদ্ধিতা। আমাদের ঔদাসীন্য।
আমরা যদি আমাদের নিজেদের বিচার করি, তবে হয়তো কিছুটা উত্তর পাওয়া যেতে পারে। সাধারণত আমরা রামাদান মাসকে অন্যান্য মাস থেকে পৃথক করি, কারণ এই মাসে রোযা রাখতে হয়। এই মাসে সাহরী করতে হয়, ইফতার করতে হয়, তারাবী পড়তে হয়। ব্যাস। হয়ে গেল পৃথকীকরণ।
অথচ আমরা কি মূর্খতার সাথেই না এই মাসের গুরুত্বকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি! আল্লাহ্ তা’লা কুরআনুল কারীমে বারংবার রামাদানের গুরুত্তের কথা শুনিয়েছেন। রাসুলাল্লাহ (সঃ) তার জীবদ্দশায় অসংখ্যবার রামাদানের ফযিলতের কথা বর্ণনা করেছেন। এটাকি শুধুই রোজা রাখা আর তারাবী পড়ার মাস?
নাহ! এটা সেই মাস, যে মাসে পবিত্র কুরআন এ পৃথিবীতে নাযিল হয়। এটা সেই মাস, যে মাসে আল্লাহ্র পূর্ববর্তী কিতাবসমূহ ও নাযিল হয়। এটা সেই মাস, যে মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় আর জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। এটা সেই মাস যে মাসে শয়তানকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। এটা সেই মাস যে মাসের প্রতিটা মুহূর্তই দুয়া কবুলের আর গুনাহ মাফের মুহূর্ত। এটা সেই মাস যে মাসের ৩০ দিনের ট্রেনিং এ কারো জীবন বদলে যেতে বাধ্য। আমরা এই রোজার ফযিলত কতটা তা কি আমরা আঁচ করতে পারি? কি বলেন আল্লাহ্ এই মাস সম্পর্কে?
“রোজা আমার জন্যে আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।”
এটা সেই মাস। এটা সেই বরকতময় মাস। কিন্তু আমরা কি করছি? আমরা সবাই মুখে উপরের কথাগুলো বলছি। অন্তর দিয়ে অনুভব করছিনা। সাহরী খেয়ে দিনভর রোজা রাখছি, তবু সেই রোজার সম্মান সম্পর্কে অবহিত হচ্ছি না। আমরা রোজা রেখে মিথ্যা বলছি, রোজা রেখে অনৈসলামিক দৃশ্য দেখছি, অনৈসলামিক কথা শুনছি, কানে হেডফোন লাগিয়ে মিউসিক শুনছি, গায়ের মাহরামের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছি!
রোজা কি শুধু পেটের? রোজা সমগ্র দেহের। জিহ্বার, কানের, চোখের, হাতের, পায়ের, যৌনাঙ্গের, মস্তিষ্কের, সর্বোপরি অন্তরের। একটু ভেবে দেখুন তো, আমরা কি অন্তর দিয়ে রোজা রাখছি? আমরা কি সত্যিই তাকওয়া অর্জনের জন্যে দিনভর উপোস থাকছি? নাকি রোজা রাখতে হয় বলেই রাখছি?
আসুন আমাদের সালাতে চোখ দিই। আমরা কয়জন এ মাসে সালাতের গুরুত্ব বুঝে সালাত আদায় করছি? অথবা কয়জনই বা সালাত আদায় করছি? অথচ এটা সেই অসম্ভব রহমের মাস যে মাসের এক নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরয ইবাদতের সমান! আর এক ফরজ ইবাদত অন্য মাসের ৭০ ফরজ ইবাদতের সমান! আপনি কি এটা বুঝে সালাত পড়ছেন?
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম রাত্রী এই মাসেই আসে। লাইলাতুল ক্বাদর। যে রাত্রি হাজার মাসের চাইতে উত্তম। যেই রাত রামাদানের শেষ দশ রাতে অবস্থিত। আমরা কি কখনো তা সন্ধান করেছি? নাকি কারো ফতোয়া শুনে ২৭ রোজার রাতে কাঁধে জায়নামাজ নিয়ে মসজিদে দৌড়েছি? আমরা কি আসলেই এই রাতের ফযিলত সম্পর্কে সচেতন? আসলেই?
রাসুল্লাল্লাহ (সঃ) বারবার শিক্ষা দিয়েছেনএই মাস রাত্রি জাগরণের মাস। এই মাস কিয়াম করার মাস। আমরা কি একবারও এই শিক্ষার মর্ম বুঝেছি? নাকি শুধু তারাবী ৮ রাকাত না ২০ রাকাত এর তর্কেই মাস কাবার করে দিয়েছি? আমরা কি একবারও রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঘুম থেকে উঠে নামাযে দাঁড়িয়েছি? সিরিয়াসলি, আমরা কি আসলেই এই মাসকে বুঝতে পেরেছি?
প্রতিটি নেক কাজের বিনিময় ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন আল্লাহ্। কিন্তু রামাদানের রোযার বিনিময় এর গুণন সংখ্যা সীমা-সংখ্যহীন। এই মাসের ইবাদতের কেন এত ফযিলত? কেন এত ফেরত? কেন রাসুলাল্লাহ (সঃ) বলছেন রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ্র কাছে মেশকের গন্ধের চেয়েও উৎকৃষ্ট? কেন? আমরা কি কখনো প্রশ্ন করেছি নিজেদের?
রাসূলাল্লাহ (সঃ) বলেছেন
ঐ ব্যক্তি হতভাগা, যে ব্যক্তি মাহে রামাদান পেল অথচ তার জীবনের গুনাহ মাফ করাতে পারলো না।
নিতান্তই হতভাগা না হলে এই মাসের ফযিলত থেকে কেউই বঞ্চিত হয়না। কেউ না। এটা কত বড় একটা সুযোগ এটা বুঝতে মহাজ্ঞানী হতে হয়না। একটু অন্তর দিয়ে অনুধাবনের প্রয়োজন শুধু।
রাসুলাল্লাহ (সঃ) আরো বলেছেন যে ব্যক্তি রোযা রাখার পরেও মিথ্যা বলা ও খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকে না তার পানাহার ত্যাগ করায় আল্লাহ্র কোন প্রয়োজন নেই।
ভেবে দেখুন এমন একটা মাস, যে মাসের রহমত থেকে কেউ বঞ্চিত হয়না, সেই মাসের প্রধান ইবাদত রোজা, অথচ সামান্য হেলায় তা আল্লাহ্ ডাস্টবিনে ফেলে দিতে পারেন!!
তাই আসুন আমরা রামাদানের সঠিক মর্যাদা দেয়া শিখি, এ মাসের সর্বোচ্চ ব্যাবহার নিশ্চিত করতে শিখি, নিজেদের গুনাহ মাফ করতে শিখি। আসুন আমরা এই মাসকে “পবিত্র মাস” বলেই দায়িত্ব খালাস না করে মাসটিকে সুযোগের মাস হিসেবে দেখি। নিজেদের অসীম পাপের বোঝা হাল্কা করার শর্টকাট পথ হিসেবে দেখি। দিনভর উপোস থেকে, যাচ্ছেতাই করে বেড়িয়ে রাতের বেলা তারাবী “পড়ার জন্য পড়া” হিসেবে বিবেচনা না করে এই মাসের প্রতিটা মুহূর্তকে আল্লাহ্র দাসত্বে লাগাই। নিজদের তাকওয়া বাড়াই। ইনশা আল্লাহ্ পরবর্তী সকল মাসেই আল্লাহ্ আমাদের হিদায়াতের রাস্তা দেখাবেন।
আল্লাহ্ সর্বজ্ঞানী
যুবকদের প্রতি ৭৫টি নসীহত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সকল প্রশংসা সেই আল্লাহ তায়ালার জন্য যিনি বলেন: “তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদেরকে আমি নসীহত করেছি এবং তোমাদেরকেও নসীহত করছি যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর।” (সূরা নিসা-১৩১)
দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর ও রাসূল মুহাম্মদের উপর। যিনি বলেন: আমি তোমাদেরকে নসীহত করছি আল্লাহ ভীতির জন্য, ধর্মীয় নেতার কথা শোনা ও তাঁর আনুগত্য করার জন্য। আল্লাহ ভীতি হলো তাঁর আদেশ মান্য করা নিষেধ থেকে দূরে থাকা। তাকওয়াই হলো দুনিয়া ও আখিরাতে সৌভাগ্যের চাবিকাঠি।
নিম্নে কতিপয় মূল্যবান ইসলামী নসীহত সন্নিবেশিত করা হল। নছীহতগুলো দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। যেমন- ইবাদত-বন্দেগী, লেন-দেন, আদব-শিষ্টাচার, চরিত্র-ব্যবহার ইত্যাদি। যে মুসলিম যুবক প্রয়োজনীয় ও উপকারী বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, আমরা সে যুবকের প্রতি তার স্মরণের উদ্দেশ্যে এ নছীহতগুলো পেশ করছি। আর স্মরণ মুমিনদের উপকারে আসবে। আমরা আল্লাহর দরবারে আশা রাখি- যে ব্যক্তি এগুলো শুনবে বা পাঠ করবে আল্লাহ তাকে উপকৃত করুন। যে ব্যক্তি এগুলো লিখবে বা প্রচার করবে বা আমল করবে তাকে সুমহান প্রতিদান ও পুরস্কারে ভূষিত করুন। তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই সর্বোত্তম কর্ম সম্পাদনকারী।
নছীহতগুলো নিম্নরূপ:
1. আল্লাহ তায়ালার জন্য নিয়তকে পরিশুদ্ধ করবে। কথায় ও কাজে মানুষের প্রশংসা পাওয়া কিংবা দুনিয়ার কোন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য রিয়া পরিত্যাগ করবে।
2. যাবতীয় কথা, কাজ ও আচার-আচরণে মুহাম্মদ মাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ অনুসরণ করবে।
3. আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করবে। যাবতীয় নির্দেশ পালন এবং নিষেধ থেকে দূরে থাকতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবে।
4. আল্লাহর নিকট খাঁটি ভাবে তওবা করবে। বেশী বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
5. তোমার কথা ও কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সূক্ষ্ম দৃষ্টির কথা স্মরণ রাখবে। জেনে রাখ আল্লাহ্ তোমাকে দেখেন এবং তোমার হৃদয়ের গোপন খবরও তিনি জানেন।
6. আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ, নবী-রসূলগণের প্রতি এবং শেষ দিবস ও তকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি দৃঢ়ভাবে ঈমান পোষণ করবে।
7. বিনা দলীলে কারো তাক্বলীদ বা অন্ধ অনুকরণ করবে না।
8. ভাল কাজে প্রতিযোগিতা করবে।
9. (রিয়াযুস্ সালেহীন) কিতাবটি সংগ্রহ করবে। নিজে পড়বে পরিবারের অন্যদেরকেও পড়ে শোনাবে। ইমাম ইবনুল কাইয়েমের (যাদুল মাআদ) গ্রন্থটিও সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে। (কিতাব দুটি বাংলায় পাওয়া যায়।)
10. প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল নাপাকি থেকে সর্বদা পবিত্র থাকবে।
11. জামাতের সাথে মসজিদে গিয়ে প্রথম ওয়াক্তে নামায আদায় করতে সচেষ্ট থাকবে। বিশেষ করে এশা ও ফযর নামায।
12. দুর্গন্ধযুক্ত খাদ্য পরিত্যাগ করবে। যেমন- কাঁচা পিয়াজ, কাঁচা রসূন। এবং ধুমপান করে নিজেকে এবং মুসলমানদেরকে কষ্ট দিবে না।
13. জামায়াতের বিশেষ ফজিলত হাসিলের লক্ষ্যে সর্বদা জামায়াতে নামায আদায় করবে।
14. ফরয যাকাত আদায় করবে। যাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে হক্বদারেদের ব্যাপারে কৃপণতা করবে না।
15. আগে ভাগে জুমআর নামাযে যাওয়ার চেষ্টা করবে। দ্বিতীয় আযানের পর মসজিদে আসার অভ্যাস পরিত্যাগ করবে।
16. ঈমানের সাথে আল্লাহর নিকট প্রতিদান পাওয়ার আশায় রমযানের রোযা পালন করবে। এর মাধ্যমে তোমার পূর্বাপর যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
17. শরীয়ত সম্মত কোন ওজর ব্যতীত রমযান মাসের কোন একটি রোযাও পরিত্যাগ করবে না। অন্যথা গুনাহগার হয়ে যাবে।
18. রমযানের রাতগুলোতে কিয়াম করবে বিশেষ করে লায়লাতুল ক্বাদরে-ঈমান ও প্রতিদানের আশায় কিয়াম করবে। যাতে করে তোমার পূর্বকৃত পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
19. যদি সামর্থবান হয়ে থাক তবে দ্রুত হজ্ব-ওমরার উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহর দিকে সফর কর। দেরী করা থেকে সাবধান হও।
20. পবিত্র কুরআন অর্থসহ পড়ার চেষ্টা কর। কুরআনের আদেশ পালন কর, নিষেধ থেকে দূরে থাক। যাতে করে প্রভুর দরবারে কুরআন তোমার পক্ষে দলীল হয় এবং কিয়ামত ময়দানে তোমার জন্য সুপারিশ করে।
21. সর্বদা আল্লাহ তায়ালার জিকিরে মশগুল থাকবে- প্রকাশ্যে-গোপনে, দাঁড়ানো, বসা ও শোয়াবস্থায়-সর্বদাই। আল্লাহর জিকির থেকে কখনো গাফেল হবে না।
22. যিক্রের মজলিসে (ইলমী অনুষ্ঠানে) বসবে। কেননা এধরণের মজলিস জান্নাতের বাগান।
23. হারাম এবং গোপন বিষয় দেখা থেকে তোমার দৃষ্টিকে নত রাখবে। সেদিকে দৃষ্টিপাত থেকে সর্বদা সাবধান থাকবে। কেননা নিষিদ্ধ দৃষ্টি হল শয়তানের পক্ষ থেকে একটি বিষাক্ত তীর।
24. টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরবে না। চলাফেরায় কখনো অহংকারী ভাব প্রকাশ করবে না।
25. রেশমের কাপড় বা স্বর্ণের কোন কিছু পরিধান করবে না। কেননা তা পুরুষদের জন্য হারাম।
26. মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে না। আর তোমার পরিবারের কোন মহিলাকেও পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বন করতে দেবে না।
27. দাড়ি ছেড়ে দাও। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমার গোঁফ কাট এবং দাড়ি ছেড়ে দাও।” (বুখারী ও মুসলিম)
28. হালাল ছাড়া অন্য কিছু ভক্ষণ করবে না এবং হালাল ব্যতীত অন্য কিছু পান করবে না। তাহলে তোমার দুয়া কবুল হবে।
29. খানা-পিনার সময় বিসমিল্লাহ্ বলবে। শেষ করলে আলহামদু লিল্লাহ বলবে।
30. ডান হাতে খানা-পিনা করবে। লেন-দেনের ক্ষেত্রে ডান হাতে গ্রহণ করবে এবং ডান হাতেই প্রদান করবে।
31. কারো প্রতি জুলুম করবে না। কেননা কিয়ামত দিবসে জুলুম অন্ধকার হয়ে দেখা দিবে।
32. মুমিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কাউকে সাথী হিসেবে গ্রহণ করবে না। আর তোমার খানা যেন ভাল মানুষ ব্যতীত অন্যে না খায়।
33. সাবধান! ঘুষ খাবে না। নিবেও না দিবেও না, এ ব্যাপারে মধ্যস্থতাও করবে না। কেননা এরূপ যে করে সে অভিশপ্ত।
34. আল্লাহ্কে নাখোশ করে মানুষের সন্তুষ্টি চেও না। কেননা আল্লাহ তাতে অসন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।
35. শরীয়ত সম্মত প্রতিটি বিষয়ে নেতৃবৃন্দের আনুগত্য করবে এবং তাদের সংশোধনের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করবে।
36. সাবধান! কখনো মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না। আর সত্য সাক্ষ্যও গোপন করবে না। (যে ব্যক্তি উহা গোপন করবে তার অন্তর পাপী। আর তোমাদের আমল সম্পর্কে আল্লাহ পরিজ্ঞাত। (সূরা বাকারা-২৮৩)
37. (সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। আর এক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হলে ধৈর্য ধারণ করবে।) (সূরা লোকমান-১৭।) আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা আদেশ করেছেন তাই সৎকাজ এবং তাঁরা যা নিষেধ করেছেন তাই অসৎকাজ।
38. ছোট-বড় সব ধরণের হারাম কাজ পরিত্যাগ কর। কখনো আল্লাহ তায়ালার নাফরমানী করবে না। এক্ষেত্রে কাউকে সহযোগিতাও করবে না।
39. কোন ভাল কাজকেই ছোট মনে করবে না। রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কোন বস্তু পরিত্যাগ করাটাও একটা ঈমানী কাজ। লজ্জাবোধ ঈমানের অংশ।
40. ব্যভিচারের নিকটবর্তী হবে না। আল্লাহ বলেন: ”তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। কেননা উহা অশ্লীলতা এবং খুবই নিকৃষ্ট কাজ।” (সুরা বানী ইসরাইল-৩২)
41. পিতামাতার সাথে সাদাচার করবে। সাবধান! তাদের কথা অমান্য করবে না যদি না তারা ইসলাম বিরোধী নির্দেশ প্রদান করে। কিন্তু তারা যদি ইসলাম বিরোধী কাজের নির্দেশ দেয় তবে অবস্থায়ও ভদ্রতা বজায় রেখে তাদের সে নির্দেশ পালন থেকে বিরত থাকবে।)
42. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে। এবং তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপারে সাবধান হবে।
43. প্রতিবেশীর সাথে ভাল ব্যবহার করবে। তাকে কষ্ট দিবে না। সে কষ্ট দিলে তাতে ধৈর্য ধারণ করবে।
44. সৎ ব্যক্তি এবং ঈমানী ভাইদের সাথে ঘন ঘন সাক্ষাৎ করবে।
45. শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে ভালবাসবে। আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে ঘৃণা করবে। কেননা এটা হল – ঈমানের সর্বাধিক মজবুত হাতল।
46. সৎব্যক্তিদের সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করবে। অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করবে।
47. কোন মুসলিমকে বিপদগ্রস্থ অবস্থায় দেখলে যত তাড়াতাড়ি পারা যায় তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে যাবে এবং তাদেরকে আনন্দিত রাখার চেষ্টা করবে।
48. নম্রতা, ধীর স্থিরতা এবং ধৈর্যাবলম্বন করবে। তাড়াহুড়া পরিত্যাগ করবে।
49. অন্যের কথার মাঝে বাধা সৃষ্টি করবে না। সুন্দরভাবে তা শোনার চেষ্টা করবে।
50. জানা-অজানা সকল মুসলিম ভাইকে সালাম দিবে।
51. সুন্নতি সালাম দিবে। বলবে: আসসালামু ওয়া আলাইকুম। হাত বা মাথা দিয়ে ইশারা করাকেই যথেষ্ট মনে করবে না।
52. কাউকে গালিগালাজ করবে না। খারাপ ভাবে কারো বর্ণনা দিবে না।
53. কাউকে অভিশাপ দেবে না। এমনকি তা যদি চতুষ্পদ জন্তু বা কোন জড় বস্তুও হয়।
54. কোন মানুষের ইজ্জতে কোন প্রকার অপবাদ দিবে না বা তার কুৎসা রটনা করবে না। কেননা এরূপ করা কবিরা গুনাহ।
55. চুগলখোরি করবে না। অর্থাৎ ফ্যাসাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনকে বলবে না।
56. গীবত করবে না। (গীবত হল তোমার মুসলিম ভায়ের দোষের কথা তার অসাক্ষাতে কারো কাছে বলা)।
57. কোন মুসলিমকে ভয় দেখাবে না এবং তাকে কোন প্রকার কষ্ট দিবে না।
58. মানুষের মাঝে সমঝোতা করার চেষ্টা করবে। কেননা এটা হল একটি উত্তম আমল।
59. জবানের হেফাজত করবে। ভাল কথা বা কাজের কথা বলবে, অন্যথা চুপ থাকবে।
60. সত্যবাদী হও মিথ্যা পরিত্যাগ কর। কেননা মিথ্যা পাপ কাজের রাস্তা দেখায় আর পাপ জাহান্নামে নিয়ে যায়।
61. দুমুখো হয়ো না। একই বিষয়ে এদের কাছে এক কথা অন্যদের কাছে আর এক কথা বলবে না।
62. আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করবে না। আর সত্য বিষয় হলেও বেশী বেশী কসম করার অভ্যাস করবে না।
63. কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে না। কেননা তাকওয়ার মানদণ্ড ছাড়া কারো উপর কারো প্রাধান্য নেই।
64. কোন জ্যোতির্বিদ, গণক বা যাদুকরের কাছে যাবে না। তাদের কোন কথা বিশ্বাস করবে না। এতে ঈমানের ক্ষতি হয়।
65. কোন মানুষ বা প্রাণীর চিত্রাঙ্কন করবে না। কেননা কিয়ামত দিবসে চিত্রকরদেরকে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে।
66. তোমার বাড়িতে কোন প্রাণীর ছবি রাখবে না। কেননা তাতে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।
67. কেউ হাঁচি দেয়ার পর আলহামদু লিল্লাহ বললে তার জবাবে ইয়ারহামু কাল্লাহ বলবে।
68. কোন ক্রমেই তাবিজ-কবচ, তাগা ইত্যাদি ব্যবহার করবে না। কেননা এগুলো ব্যবহার করা শিরক।
69. প্রতিটি পাপকাজের জন্য অনতিবিলম্বে তওবা করবে। খারাপ কাজ হয়ে গেলেই ভাল কাজ করবে, যাতে উক্ত পাপ মোচন হয়ে যায়। এরূপ বলবে না অচিরেই তওবা করব।
70. আল্লাহ্ তায়ালার ক্ষমা ও করুণার আশাবাদী হও। আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখ।
71. আল্লাহ্র শাস্তির ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত থাক। তার শাস্তি থেকে নিজেকে নিরাপদ ভেবো না।
72. বিপদাপদে ধৈর্য ধারণকারী হও। এবং সুখের কালে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।
73. অধিকহারে সৎকাজ করবে। যাতে করে মৃত্যুর পরেও তার ছওয়াব জারি থাকে। যেমন মসজিদ তৈরি করা, ইসলামী জ্ঞানের প্রচার ও প্রসার করা।
74. আল্লাহর কাছে জান্নাত পাওয়ার প্রার্থনা করবে এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় কামনা করবে।
75. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি অধিকহারে দরূদ পাঠ করবে।
ওয়া ছাল্লাল্লাহু আলা নাবিয়্যেনা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আলিহি ওয়াছাহবিহি ওয়া সাল্লাম।
কিয়ামত দিবস পর্যন্ত আল্লাহ তাঁর পরিবার ও সকল সাহাবীদের প্রতি অবিরাম ধারায় রহমত ও শান্তি নাযিল করুন। আমীন।
অনুবাদ: মুহাঃ আবদুল্লাহ্ আল কাফী বিন আব্দুল জলীল
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল