দৈনিক ২ বার কেন ৫ বার ফেচওয়াশ
করে যতটা না ফ্রেশনেস খুজে পাওয়া যায় ,
দৈনিক ৫ বার উযু করে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার ফলে তার চাইতে অনেক বেশী মনের প্রশান্তি খুজে পাওয়া যায় ,
চেহারার উজ্জ্বলতা অনুভব করা যায়। ঠিক তেমনি মেকআপ করে কৃত্রিম
ভাবে ক্ষণিকের জন্য হয়তো সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায় কিন্তু দৈনিক ৫ বার উযু
করে নামাজ আদায় করার ফলে আল্লাহ’র পক্ষ থেকে চেহারার যে স্থায়ী সৌন্দর্য পাওয়া যায় ,
তা পৃথিবীর কোন বিউটিশিয়ানের পক্ষে সম্ভব নয় । অতএব নামাজ ছেড়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত ।
আল্লাহ বলেন ,

“সুতরাং দুর্ভোগ সে সব নামাযীর জন্য,
যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে উদাসীন।” (সুরা মাউন ৪-৫)

Mounting created Bloggif

আখিরাত

কিয়ামত বা মহাপ্রলয়ের পর ৪০বছর পর্যন্ত কোন মানব-দানব, জ্বীন-পরী, ফেরেশতা, পশু-পক্ষী প্রভৃতি কোন প্রাণীই জীবিত থাকিবে না। তারপর আল্লাহপাকের আদেশে হযরত জিব্রাইল, মিকাইল, ইসরাফিল, আজরাইল (আঃ) এবং আল্লাহর আরশবাহী ৮জন ফেরেশতা ও বেহেশতের রক্ষক রেজওয়ান ও দোযখের দারগা মালেক ফেরেশতা জীবিত হইবেন। তারপর আল্লাহ পাকের আদেশে ইসরাফিল (আঃ) পুনরায় তাঁহার শিঙ্গায় ফুঁৎকার দিলে হযরত আদম (আঃ) হইতে আরম্ভ করিয়া মহাপ্রলয় পর্যন্ত যত মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে ও মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছে, সকলেই কবর হইতে উত্থিত হইবে। এ সমদ্ধে আল্লাহ পাক তাঁহার কালাম কুরআন মজিদে ঘোষনা করিয়াছেনঃ

وُنُفِخَ فِىْ الصُّوْرِ فَاِذَاهُمْ مِنَ الْاَجْدَاثِ اِلَي رَبِّهِمْ يَنْسِلُوْنَ قَا لُوْا يَوْيَلُوْنَ مِنْ بَعَثْنَا مِنْ مَرْقَدِنَا هَذَا مَاوْعَدَا الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُوْنَ

উচ্চারণঃ ওয়া নুফিখা ফিচ্ছুরি ফাইযা হুম মিনাল আজদাছি ইলা রাব্বিহিম ইয়ানসিলুনা ক্বালু ইয়াও ইয়ালোনা মিন বা’ছনা মিন মারক্বাদ্বিনা হা-যা মাওয়াদার রাহমানু ওয়া ছাদাক্বাল মুরছালুন ।
অনুবাদঃ অর্থাৎ যে সময় ইসরাফিল (আঃ) পনুরায় শিঙ্গায় ফুঁক দিবেন, তখন সকলে আপন আপন সমপাধি হইতে উত্থিত হইয়া তাহাদের প্রভুর দিকে (আল্লাহর নিকট) ধাবিত হইবে। তাহারা বলিবে হায়! কে আদিগকে মাহানিদ্রার স্থান হইতে জাগরিত করিল? ফেরেশতাগণ বলিবেন, ইহাই সেই কিয়ামত যাহা করুণাময় আল্লাহপাক অঙ্গীকার করিয়াছেন এবং নবী রাসূরগণ বলিয়াছেন।
কিয়ামতের দিন জ্বীন-ইনছান, পশু-পক্ষী, কীট_পতঙ্গ সবাই পুনর্জীবিত হইয়া হাসরের মাঠে একত্রিত হইবে । তারপর আল্লাহ পাক নিজে বিচারক হইয়া পাপ পুণ্যের বিচার করে পুণ্যবানদিগকে বেহেশতে এবং পাপীদিগকে দোজখে প্রেরণ করিবেন ।
যখন বেহেশ্তী ও দোজখীদের নিজ নিজ স্থানে উপস্থিত করা হইবে তখন জান্নাতী ও দোজখীদিগকে মাঝামাঝি স্থানে দুম্বার আকৃতি বিশেষ আনয়ন করিয়া তাহাকে জবেহ করা হইবে এবং বেহেশতী ও দোজখীদিগকে সম্বোধন করিয়া বলা হইবে যে, অদ্য হইতে তোমার আর কখনও মৃত্যু হইবে না। অতঃপর বেহেশতীগন অনন্তকাল পরম সুখে কাল যাপন করিতে থাকিবে। আর দোজখীগণ চিরকালের জন্য দোযখের কঠোর যন্ত্রণা ভোগকরিতে থকিবে। দজোখবাসীদের সম্বন্ধে আল্লাহপাক বলিয়াছেন –

لاَ يَمُوْتُ فِيْهَا وَلاَيَحْىَ

–সেখানে তাহারা মরিবেও না।

Mounting created Bloggif

তাওবা করার নিয়মাবলী :

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

তাওবা কি
যে কার্যক্রম পরিচালনার দ্বারা মানুষ গুনাহ হতে নাজাত প্রাপ্ত হয় তাহাই তাওবা ৷ অথ্যাত্‍ গোনাহের জন্য আল্লাহর নিকট আন্তরিক ভাবে লজ্জিত হয়ে পুনোরায় গোনাহ না করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়াকে তাওবা বলা হয়৷ মৃত্যুর পূর্ব মুহুত্ত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য তাওবা দরজা খোলা থাকে৷ ” নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা কারীকে ভালবাসেন “: সুরা বাকারা৷ আয়াত :—– আল্লাহ মুমিনদেরকেও তাওবা করার নির্দেশ দিয়ে বলেন ” হে মুমিনগন ! তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তাওবা কর , যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার৷”
সুরা নুর আয়াত ২৪ : ৩১ রাসুলুল্লাহ (স:) বলেছেন ” আমি প্রত্যহ সত্তর বারের অধিক আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা ও তাওবা করে থাকি৷
তাওবা করার নিয়মাবলী :
তাওবা করার পূর্বে কিছু আনুষ্ঠানিকতা করা উচিত্‍ যাতে নফস এবং শয়তানের আশাভংগ ঘটে৷
মানুষ গুনা করতে ভালবাসে, আর আল্লাহ তা’লা মানুষের গুনা মাফ করতে ভালবাসেন৷ তাই সব মুসলমানের উচিত্‍ হবে আল্লাহ’তালার এই সেফাতের উপর জুলুম না করা৷ তওবা করার দ্বারা অন্তরের প্রবিত্রতা হাসিল হয়৷ প্রধমে এখলাসের সাথে তাওবা করার নিয়্যাত করতে হবে৷ তাওবা করার জন্য দিন ও সময় নিধর্্যারন করে একটি নির্জন কক্ষ বা মসজিদ বা কোন উপযুক্ত স্থান বেছে নিতে হবে৷ গোসল করে পরিস্কার ও পাক কাপড় পরিধান করে দুই রাকাত করে চার রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিতে হবে৷ এবার তাশাহুদে বসার মত বসে সন্মুখে রক্ষিত পাত্র থেকে পবিত্র ধুলোমাটি মুখমন্ডলের সর্বত্র মাখবে ৷ চক্ষু দিয়ে পানি গড়াবে,অন্তরে লজ্জা,অনুতাপ ও দু:খের ভারে অস্থির থাকবে৷ কন্ঠস্বর বিষাদময় ও কম্পিত হয়ে পরবে৷ তখন একে একে পূর্বেকৃত পাপগুলোর কথা স্মরণ করে করে প্রত্যেক পাপের জন্য নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকবে৷
অতপর: নিজের আত্নাকে লক্ষ্য বলবে হে , আমার হৃদয় ! তোমার কি অনুতাপ করার সময় এখনো হয়নি ?
তুমি কি আল্লাহর দরবারে এখনো তওবা করবে না? আল্লাহ’তালার কঠোর শাস্তির মোকাবেলা করার শক্তি কি তোমার আছে ? এখনো কি তুমি আল্লাহ’তালাকে খুশী করা দরকার মনে কর না ? এভাবে অনুনয় বিনয় সহকারে অনেক বিলাপ ও রোনাজারী করতেই থাকবে৷
অতপর: রহমানুর রহীম আল্লাহ’তালার নিকট হস্তদ্বয় উত্তোলন করে বলতে থাকবে হে পরোয়ারদেগার !
তোমার পলাতক বান্দা আবার তোমার কাছে ফিরে এসেছে৷ পাপী ও দোষী ভৃত্য তোমার দরবারে এসে ক্ষমা চাইতেছে৷ তোমার পাপী বান্দা তোমার কাছে এই অজুহাত নিয়ে তোমার নিকট আরজু পেশ করতে সাহসী হয়ে এসেছে যে, হে প্রভু! তুমি অনন্ত অসীম দয়াময়৷ তোমার দয়াসমুহের বিন্দুমাত্র দান করে আমাকে মাফ করো৷ এ পাপীকে তোমার দয়ার ছায়ায় আশ্রয় দান করো৷ হে রব্বুল আ’লামীন ! তুমি আমার পর্ূেবকার সকল দোষ ত্রুটি মাফ করে দিয়ে আমার বাকী জিন্দেগীকে পাক-পবিত্র ও নিস্পাপ কর৷ হে দয়াময় ! যাবতীয় কল্যান ও মংগলের কুঞ্জী তোমারই হাতে৷ তুমিই তো শুধু অনুগ্রহ ও দান-দক্ষিনার কর্তা৷
অতপর: অন্তরের অন্তস্থল থেকে আল্লাহ’তালার দরবারে এই দোয়াটি করবে – হে সকল সমস্যা ও সংকট মোচনকারী মহান ত্রানকর্তা ! হে দু:খী অসহায় বান্দাদের আশ্রয়দানকারী ! হে সর্বশক্তিশালী আল্লাহ’তালা!
যার শুধু কুন (হয়ে যাও) বাক্য দ্বারা বড় বড় সৃষ্টি গুলি অস্তিত্ব প্রাপ্ত হয়৷ আমি গুণাহের গভীর সমুদ্রে নিমর্জিত৷ তুমিই শুধু আমাকে রক্ষা করতে পার৷ এ ভীষণ দু:সময়ে আমি তোমারই আশ্রয় প্রার্থী৷ হে সুমহান কর্তা! তুমি আমার তাওবা কে কবুল করো৷ তুমিই একমাত্র তাওবা কবুলকারী৷ আর তুমিই শুধু অনুগ্রহশীল ও অনুগ্রহকারী৷
অতপর: আরো অধিক পরিমানে কান্নাকাটি করে এভাবে দরখাস্ত পেশ করবে৷ হে সর্বজ্ঞাতা মহান আল্লাহ’তালা! তুমিই তো এমন কার্য বিধায়ক যে শত সহস্র কার্যও তোমাকে অন্য এক কার্য থেকে বিরত রাখে না৷ তুমি কোন হালতেই কোন কার্য হতে বেখবর নও৷ লাখো কোটি বাক্যও তোমাকে কোন লোকের বাক্য শ্রবণ করতে বাধা প্রদান করে না ৷ তুমি অসংখ্য প্রাথনাকারীর মধ্যেও একের প্রার্থনা অন্যের প্রার্থনার সাথে মিশ্রত কর না৷ বার বার প্রার্থনাকারীর প্রতি তুমি বিরক্ত হও না৷ হে মহান প্রভু ! তোমার অসংখ্য
গুনাবলীর উপর ভরসা করেই এহেন প্রার্থনা পেশ করছি৷ তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং তোমার দয়া লাভে ধণ্য কর৷ হে সুমহান সর্বশ্রেষ্ট দয়াময়৷ নিশ্চয়ই তুমি সর্বশক্তিমান, তুমি যা খুশি তাই করতে সক্ষম৷
এবার হুজুর (স:) ও তার তার আহাল পরিজন ও সাহাবী (রা) গনের প্রতি দুরুদ প্রেরন করে সকল মৃত মুমিন মুমিনাত ও মুসলমান ভাই বোনদের উপর ছোয়াব রেছানী করবে৷ আলোচিত বিষয় সমুহ সঠিক ভাবে আদায়ের পর এখন আপনার তওবাতুন্ন্সুহা পূর্ণ হলো৷ সাথে সাথে আল্লাহর বান্দা এরুপ বেগুনাহ হয়ে যাবে যেন এই মাত্র সে মাতৃ গর্ভ থেকে জন্ম গ্রহন করলো৷ পুনোরায় গুনাহ করার পূর্বেই যদি তার মৃতু্য হয়ে যায় তবে কাল কেয়ামতের দিন সে তার আমল নামায় কোন গুনাহ দেখতে পাবে না৷ এ এক অপূর্ব অনুভুতি, নিজেই অনুভব করা যাবে, অন্তর কলুষমুক্ত হালকা হয়ে গেছে এবং নেক আমলে মজা পাওয়া যাচেছ৷
তাওবা করে নেয়ার পর নিজেকে কবীরা গুনাহ থেকে সর্বদা পবিত্র রাখতে করনীয় :
কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হলে কবিরা গুনাহ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে হবে

Mounting created Bloggif

সালাত আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে একমাত্র তাঁর এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর নি:সন্দেহে সালাত বা নামাজ তাঁর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, সালাত কায়েম করো। (সূরা বনি ইসরাইল : ৭৮)। কথা ও কাজে তার প্রকাশ ঘটাতে হবে। এ জন্য আল্লাহপাক যেসব কাজ ফরজ করে দিয়েছেন তার মধ্যে সালাত অন্যতম। পবিত্র কুরআনে বারবার সালাত কায়েম করার হুকুম দেয়া হয়েছে।

আল কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুহাম্মদ সা: তোমার ওপর যে পবিত্র কিতাব নাজিল হয়েছে তা পড়ো এবং নামাজ কায়েম করো। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও দুষ্কার্য প্রতিরোধকারী।’ (সূরা আনকাবুত-৪৫)।

সালাত বা নামাজের মর্তবা বা ফজিলত সম্পর্কে মুসলমান ভাইবোনরা যদি অন্তর দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতেন তাহলে কখনোই তারা নামাজ থেকে দূরে থাকতেন না। নামাজ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবাদত। কিয়ামতের দিন নামাজের হিসাবই সর্বপ্রথম নেয়া হবে। কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আমার স্মরণের জন্য নামাজ পড়ো।’ (সূরা তা’হা-১৪)। ‘তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সূরা বাকারা-৪৫)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: এরশাদ করেন ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি খুঁটির ওপর প্রতিষ্ঠিত। সর্বপ্রথম কালেমায়ে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা:-এর সাক্ষ্য দেয়া অর্থাৎ এই কথা স্বীকার করা যে, আল্লাহ ছাড়া এবাদতের উপযুক্ত (মাবুদ) আর কেউ নেই এবং মুহাম্মদ সা: আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। অত:পর নামাজ কায়েম করা, জাকাত প্রদান করা, হজ করা, রমজান মাসের রোজা রাখা।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

নিয়মিতভাবে মনোযোগ সহকারে অজুর সাথে পাঁচবার নামাজ সম্পন্ন করা মুসলমানদের ওপর ফরজ। কেননা নামাজের জন্য অজু অপরিহার্য। অজু ছাড়া নামাজ হয় না। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘শিরক ও কুফরি কবিরা (বৃহত্তম) গুনাহ ছাড়া নামাজ মানুষের দৈনন্দিন অন্যান্য গুনাহের (অপরাধ) ক্ষমাকারী।’ নামাজ হচ্ছে বেহেশতের চাবি ও সব এবাদতের মূল ভিত্তি। পরকালে বেহেশত বা জান্নাতের সুখ পেতে চাইলে আমাদের বেহেশতের দরজা খোলার জন্য প্রয়োজন হবে চাবির। যদি আমরা নামাজই আদায় না করি তাহলে চাবি পাবো কিভাবে? বেহেশতে সবাই যেতে চায়, সুখও সবাই পেতে চায়; সে জন্য অবশ্যই আমাদেরকে আখেরাতের সম্বল জোগাড় করতে হবে। আর এই সম্বল কেউ কাউকে দেবে না, নিজের সম্বল নিজেকেই জোগাড় বা সঞ্চয় করতে হবে। আল্লাহর প্রতি আমাদের যে ভক্তি-শ্রদ্ধা তা নামাজের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। যে নামাজে মন আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হয়, কেবল সেই নামাজই পরকালে পাথেয় হয়। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার সাহায্য লাভ করা সহজসাধ্য হয়। বিপদ-আপদে নামাজ দ্বারা আশাতীত ফল পাওয়া গেছে, এমন দৃষ্টান্তের অভাব নেই। পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণ কোনো বিপদ এলে নামাজে মগ্ন হতেন।

হজরত হুজায়ফা রা: বলেন, ‘হজরত নবী করিম সা: যখন কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তৎক্ষণাৎ তিনি নামাজে মনোনিবেশ করতেন।’ (দুররে মানসুর : আবু দাউদ, আহমদ)। মহানবী সা: এরশাদ করেন ‘যে ব্যক্তি আজান শুনে কোনো রকম ওজর ছাড়া জামাতে হাজির হয় না (নিজের জায়গাতেই নামাজ পড়ে নেয়), তার নামাজ কবুল হয় না। সাহাবায়ে কেরাম রা: আরজ করলেন, ওজর বলতে কী বোঝায়? বললেন, অসুস্খতা বা ভয়ভীতি।’ (তারগিব : আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান। মিশকাত : আবু দাউদ, দারুল কুতনি)। -ই নয়; সামাজিক ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। জামাতে নামাজ আদায় করলে মুসলমানরা দৈনিক পাঁচবার একত্রে মিলিত হওয়ার সুযোগ পান। ফলে তাদের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে ওঠে। এভাবে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার শিক্ষা নামাজ থেকে পাওয়া যায়।

হাদিসে বর্ণিত আছে, এশা এবং ফজরের নামাজ মুনাফিকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। যদি তাদের জানা থাকত যে এই জামাতের সওয়াব কত বেশি, তাহলে জমিনে হেঁচড়িয়ে হলেও এসে তারা শরিক হতো। (তারগিব) মহানবী সা: এরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আমি আপনার উম্মতের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছি এবং প্রতিজ্ঞা করছি যে, যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো গুরুত্বসহকারে আদায় করবে, তাকে নিজ দায়িত্বে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। আর যে ব্যক্তি গুরুত্বসহকারে এই নামাজ আদায় করবে না, তার ব্যাপারে আমার কোনো দায়িত্ব নেই।’ (দুররে মানসুর : আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)।

Mounting created Bloggif

নামাজ জান্নাতের চাবি

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

নামাজ দ্বীন ইসলামের মূল স্তম্ভ, বান্দার জন্য আল্লাহ পাকের দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার, বিশ্বাসের দলিল, পুণ্য কাজের মূল, সর্বোত্তম ইবাদত, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মাঝে পার্থক্য নির্ণয়কারী, মুক্তি ও নাজাতের পূর্বশর্ত এবং ঈমানের অতন্দ্র প্রহরী। নামাজে আল্লাহ তায়ালা ও বান্দার মাঝে এক অতি মহিমান্বিত, অতুলনীয় ও বিস্ময়কর মধুর সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।

সৃষ্টি জগতে মানুষের চেয়ে বেশি মর্যাদাবান আর কেউ নেই। মানুষের চেয়ে বেশি সম্মানী হলেন একমাত্র মহান স্রষ্টা আল্লাহ তায়ালা। তিনি জ্ঞান, শক্তি-ক্ষমতা, অর্থ-সম্পদ ইত্যাদি সব দিক থেকে মানুষের ওপরে। তাই মানুষকে অবশ্যই আল্লাহর সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষ আর যার সাথেই যোগাযোগ করুক, সবাই মানুষের চেয়ে জ্ঞান, শক্তি ও সম্পদে নিুমানের। এদের সাহচর্য মানুষের মানগত দিক বিনষ্ট করবে। মানুষ নিচে নামতে থাকবে। এক পর্যায়ে সে পশুর চেয়েও অধম হয়ে যাবে। আল্লাহর সান্নিধ্যই মানুষকে সীমাহীন উন্নতি ও উৎকর্ষের পথে চলতে সাহায্য করে। আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের পরই মানুষ কেবল শতভাগ পরিতৃপ্ত হয়, শান্ত ও আশ্বস্ত হয়।

পার্থিব জীবনে নানা প্রয়োজনে অসংখ্য জিনিস ও বিষয়ের সাথে আমরা জড়িয়ে পড়ি। কত মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়তে হয়! এসব সম্পর্ক ও সংশ্লিষ্টতার মধ্যে প্রচণ্ড আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। একটু-আধটু করে মানুষ এ আকর্ষণের মধ্যে ডুবে যায়। এক সময় তার অজান্তেই তার মহান প্রভুর আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। দুনিয়ার মোহে মানুষ যেন প্রভুহীন হয়ে না যায়, সে জন্য নামাজ এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শত ব্যস্ততা, হাজারো সংশ্লিষ্টতা, নানা ধরনের কাজকর্ম ও সম্পর্ক-সম্বন্ধের বন্ধন বিচ্ছিন্ন করে মহান রবের সান্নিধ্য লাভের এক অনুপম সুযোগ করে দেয় এ নামাজ। আল্লাহপ্রিয় মানুষদের জন্য নামাজ তাই সবচেয়ে বড় নেয়ামত। নামাজই তাদের আল্লাহর কথা ভুলে যেতে দেয় না।

মুসলমানদের জীবনে নামাজের আশাপ্রদ ফল অর্জন না হওয়ার চারটি কারণ হলোঃ

১। নামাজের সূরা, দোয়া তাসবিহর সঠিক উচ্চারণ বা কেরাত বিশুদ্ধ না হওয়া।

২। নামাজের গুরুত্বপূর্ণ নিময়কানুন বা মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে অজ্ঞতা।

৩। নামাজে পাঠকৃত সূরা, দোয়া তাসবিহর অর্থ ও তাৎপর্য না জানা।

৪। নামাজের শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ না করা।

– নামাজ আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়।

– নামাজ দ্বীন ইসলামের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ।

– নামাজ মুসলিম ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্য।

– নামাজ বিচার দিবসে প্রথম জিজ্ঞাসার বিষয়।

– নামাজ পুরুষ-মহিলা, ধনী-গরিব, সুস্থ-অসুস্থ সবার জন্য প্রযোজ্য।

– নামাজ সর্বাধিকবার ও আজীবনের জন্য প্রযোজ্য।

– নামাজ অতীব সাধারণ, সহজ, প্রাকৃতিক ও চমৎকার বিষয়।

– নামাজ কাজের একঘেয়েমি, বিরক্তি ও ক্লান্তি দূর করে।

– দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এমনভাবে সাজানো আছে যে মানুষের কর্মসাধ্যের পরিমাণ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর সে কর্মবিরতির সুযোগ পায়।

– সফল মুমিনের বৈশিষ্ট্য­ তারা নামাজের হেফাজত করে।

– নামাজ জান্নাতের চাবি।

– নামাজ চক্ষুর শীতলতা ও প্রাণের শান্তি।

– সঠিকভাবে নামাজ আদায় জাহান্নাম হারাম করে।

– নামাজ কিয়ামতের দিনের নূর, ঈমানের দলিল, বাঁচার উছিলা।

– নামাজ আল্লাহর জিম্মাদারিতে চলে যাওয়ার সুযোগ।

– মানুষের জীবন বাধাহীন নয়। আমাদের জীবন বিবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এসব সমস্যা কেবল আল্লাহই সমাধান করতে পারেন।

– নামাজি ব্যক্তি তার দৈনন্দিন কার্যকলাপ পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে সম্পাদন করে এবং সব কাজের দায়-দায়িত্ব আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে।

– পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এভাবে আমাদের জীবনকে আল্লাহর হেফাজতে কাটানোর বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।

আরবি হরফ মাত্র ২৯টি, জীবন-জীবিকার তাগিদে কত কিছু শিখলাম, পড়লাম, জানলাম, আমি যে নামাজ পড়ি বা আল্লাহর নিকট কবুল হওয়ার জন্য এবং জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার জন্য সর্বোপরি দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য হলেও আমাকে কুরআন শিখতে হবে। কুরআন শেখার ব্যাপারে ইচ্ছে, সঙ্কল্প ও প্রচেষ্টা না চালালে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে কি না তাও ভেবে দেখতে হবে।

কবিরা গুনাহ কি ?

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

যে সকল কাজ আল্লাহ ও তার রসুল (সঃ) কতৃক হারাম হওয়ার অকাট্য দলীল পাওয়া যায় সে গুলিই কবিরা গুনাহ৷
অত্যন্ত গুরুতর কবিরা গুনাহ ৭ টি : তার দলীল হচেছ হুজুর (সঃ) বলেছেন”তোমরা ৭ টি পাপ থেকে বেঁচে থাক :
১/ আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করোনা
২/ যাদু টোনা বা কুফুরী কালাম করোনা
৩/ অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যা করোনা
৪/ ইয়াতীমের মাল আত্বসাত্ করোনা
৫/ সুদ খেওনা
৬/ যুদ্ধক্ষেএ থেকে পলায়ন করোনা
৭/ সতী সাধ্বী সরলমতি মুমিন নারীর উপর যিনার অপবাদ দিয়োনা ( বুখারী,মুসলিম)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন কবিরা গুনাহ ৭০ টি :
০১. আল্লাহর সাথে শিরক করা;
০২. কাউকে খুন করা;
০৩. যাদু করা;
০৪. নামাযে অবহেলা করা;
০৫. যাকাত না দেয়া;
০৬. ওযর ব্যতীত রমযানের রোযা না রাখা;
০৭. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্জ্ব না করা;
০৮. পিতা মাতার অবাধ্য হওয়া;
০৯. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা;
১০. যিনা করা;
১১. সমকামিতা করা;
১২. সুদ দেয়া বা নেয়া;
১৩. এতিমের মাল ভক্ষণ;
১৪. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি মিথ্যাচার;
১৫. জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা;
১৬. শাসক কর্তৃক জনগণকে অত্যাচার করা;
১৭. অহংকার করা;
১৮. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া;
১৯. মদ পান করা;
২০. জুয়া খেলা;
২১. সতী নারীর উপর অপবাদ দেয়া;
২২. গনীমতের মাল আত্মসাত করা;
২৩. চুরি করা;
২৪. ডাকাতি করা;
২৫. রাহাজানি করা;
২৬. মিথ্যা শপথ করা;
২৭. যুলুম করা;
২৮. চাঁদাবাজি করা;
২৯. হারাম বস্তু ভক্ষণ করা;
৩০. আত্মহত্যা করা;
৩১. অধিকাংশ কথায় মিথ্যা বলা;
৩২. অন্যায় অবিচার করা;
৩৩. ঘুষ আদান প্রদান করা;
৩৪. নারী-পুরুষ একে অপরের বেশভূষা গ্রহণ করা;
৩৫. পরিবারবর্গের অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দেয়া;
৩৬. তালাকপ্রাপ্তকে হিলা করা;
৩৭. প্রশ্রাব থেকে পবিত্র না হওয়া;
৩৮. রিয়া;
৩৯. দুনিয়ার জন্য জ্ঞানার্জন করা;
৪০. আমানতের খিয়ানত করা;
৪১. খোটা দেয়া;
৪২. অন্যায়ভাবে কোন মুসলমানকে অভিশাপ দেয়া;
৪৩. ওয়াদা ভঙ্গ করা;
৪৪. গণকের কথায় বিশ্বাস করা;
৪৫. স্বামী-স্ত্রীর অধিকার খর্ব করা;
৪৬. ছবি অঙ্কন করা;
৪৭. বিদ্রোহ করা;
৪৮. অহংকার করা;
৪৯. উচ্চস্বরে বিলাপ করা;
৫০. দাস-দাসীর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা;
৫১. জীব-জন্তুর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা;
৫২. মুসলমানকে উত্যক্ত করা;
৫৩. সৎ ও খোদাভীরুকে কষ্ট দেয়া;
৫৪. অহংকারবশত টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা;
৫৫. পুরুষের জন্য স্বর্ণ ও রেশম ব্যবহার;
৫৬. মনিবের কাছ থেকে গোলামের পলায়ন;
৫৭. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া;
৫৮. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবাই করা;
৫৯. তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে সত্যের বিরোধিতা করা;
৬০. উদ্বৃত্ত পানি অন্যকে ব্যবহার করতে না দেয়া;
৬১. জেনেশুনে অন্যের সন্তান বলে পরিচয় দেয়া;
৬২. মাপে, ওজনে কম দেয়া;
৬৩. আল্লাহর আযাব সম্পর্কে উদাসীনতা প্রদর্শণ করা;
৬৪. আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া;
৬৫. বিনা ওযরে জামায়াত ত্যাগ করা;
৬৬. বিনা ওযরে জুময়া ত্যাগ করা;
৬৭. ওসিওতের মাধ্যমে কোন উত্তরাধিকারীকে বঞ্চিত করা;
৬৮. ধোকাবাজি ও প্রতারণা করা;
৬৯. মুসলমানদের গোপনীয় বিষয় ফাঁস করা এবং
৭০. সাহাবাদের কাউকে গালি দেয়া।

খুব উপকারী কিছু হাদীস

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

১. اتَّقِ اللَّه حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعْ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ
“আল্লাহকে ভয় কর যেখানেই থাকনা কেন। অন্যায় কাজ হয়ে গেলে পরক্ষণেই ভাল কাজ কর। তবে ভাল কাজ অন্যায়কে মুছে দিবে আর মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর।“ (তিরমিযী-সহীহ)
২. ((إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ))
“সব কাজই নিয়তের উপর নির্ভরশীল।“(সহীহ বুখারী)
৩. ((الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ))
“প্রকৃত মুসলিম সে ব্যক্তি যার মুখের ভাষা এবং হাত থেকে অন্য মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে।“ (সহীহ বুখারী)
৪. (( مَنْ غَشّنا فَلَيْسَ مِنِّا ))
যে আমাদের সাথে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (মুসলিম)
৫. ((مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يُؤْذِ جَارَهُ))
“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।“ (বুখারী)

৬ (( مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ ))
“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।“ (বুখারী)
৭.مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভাল কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।“ (বুখারী)
৮.(( مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ))
“একজন মানুষের একটি সুন্দর ইসলামী বৈশিষ্ট্য হল সে অযথা কাজ পরিত্যাগ করে।“ (মুওয়াত্তা মালিক)
৯. مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ
“যে তার কোন ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন।“ (বুখারী)
১০. ((مَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ))
“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের একটি কষ্ট দূর করবে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাকে অনেক বিপদের মধ্য থেকে একটি বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।“ (বুখারী)

১১. ((مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ))
“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন।“ (বুখারী)
১২. ((عَلَيْكُمْ بِالصِّدْقِ فَإِنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى الْبِرِّ وَالْبِرَّ يَهْدِي إِلَى الْجَنَّةِ))
“সব সময় সত্যকে আঁকড়ে ধরে থাক। কারণ সত্য কথা ভাল কাজের পথ দেখায়। আর ভাল কাজ জান্নাতের পথ দেখায়।“ (মুসলিম).
১৩. إِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ فَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ وَالْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ
“মিথ্যা থেকে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা অন্যায় কাজের পথ দেখায় আর অন্যায় কাজ জাহান্নামের পথ দেখায়।“ (মুসলিম)
১৪. الدَّالُّ عَلَى الْخَيْرِ كَفَاعِلِهِ
“যে ব্যক্তি ভাল কাজের রাস্তা দেখায় সে ঐ ব্যক্তির মতই সাওয়াব পায় যে উক্ত ভাল কাজ সম্পাদন করে।” (তিরমিযী-সহীহ)
১৫. اتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ
“মজলুমের বদ দুয়াকে ভয় কর। কারণ, তার বদ দুয়া আর আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই।“ (বুখারী)

জেনে নিন ৭০টি কবিরা গুনাহ ।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সত্তরটি কবীরা গুনাহ নিম্নরূপ:

১. শিরক করা ৷
২. মানুষ হত্যা করা ৷
৩. জাদুটোনা করা ৷
৪. নামাজে অবহেলা করা ৷
৫. যাকাত না দেয়া ৷
৬. বিনা ওজরে রমজানের রোযা ভঙ্গ করা ৷
৭. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্ব না করা ৷
৮. পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ৷
৯. রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তা ছিন্ন করা ৷
১০. যিনা-ব্যভিচার করা ৷
১১. লাওয়াতাত বা সমকামিতা করা ৷
১২. সুদের আদান-প্রদান ৷
১৩. ইয়াতিমের মাল আত্মসাত্ করা এবং তাদের ওপর জুলুম করা ৷
১৪. আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি মিথ্যারোপ করা৷
১৫. ধর্মযুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন৷
১৬. শাসক কর্তৃক জনগণের ওপর জুলুম৷
১৭. গর্ব-অহংকার৷
১৮. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া৷
১৯. মদ্যপান৷
২০. জুয়া খেলা৷
২১. সতী- সাধ্বী নারীকে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়া৷
২২. গনীমতের মাল আত্মসাত্ করা৷
২৩. চুরি করা৷
২৪. ডাকাতি করা৷
২৫. মিথ্যা শপথ করা ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করা৷
২৬. জুলুম বা অত্যাচার করা৷
২৭. জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা৷
২৮. হারাম খাওয়া ও যেকোন হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও ভোগদখল করা৷
২৯. আত্মহত্যা করা৷
৩০. কথায় কথায় মিথ্যা বলা৷
৩১. বিচারকার্যে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া৷
৩২. ঘুষ খাওয়া৷
৩৩. পোশাক-পরিচ্ছদে নারী- পুরুষের সাদৃশ্যপূর্ণ বেশভূষা৷
৩৪. নিজ পরিবারের মধ্যে অশ্লীলতা ও পাপাচারের প্রশ্রয়দান৷
৩৫. তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে চুক্তিভিত্তিক হিলা বিয়ে করা৷
৩৬. প্রস্রাব থেকে পবিত্র না থাকা৷
৩৭. রিয়া বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে সৎ কাজ করা৷
৩৮. দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে ইলম বা জ্ঞান অর্জন করা এবং সত্য
গোপন করা৷
৩৯. আমানতের খেয়ানত
বা বিশ্বাসঘাতকতা৷
৪০. দান-খয়রাতের খোটা দেয়া৷
৪১. তকদিরকে অবিশ্বাস করা৷
৪২. কান পেতে অন্য লোকের গোপন কথা শোনা৷
৪৩. চোগলখুরি করা৷
৪৪. বিনা অপরাধে কোন
মুসলমানকে অভিশাপ ও গালি দেয়া৷
৪৫. ওয়াদা খেলাফ করা৷
৪৬. গণকের কথায় বিশ্বাস করা৷
৪৭. স্বামীর অবাধ্য হওয়া৷
৪৮. প্রাণীর প্রতিকৃতি আঁকা৷
৪৯. বিপদে উচ্চঃস্বরে বিলাপ
করা৷ ৫০. বিদ্রোহ, দম্ভ ও অহংকার প্রকাশ৷
৫১. দাস-দাসী দুর্বল শ্রেণীর মানুষ এবং জীবজন্তুর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা৷
৫২. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া৷
৫৩. মুসলমানদের কষ্ট ও গালি দেয়া৷
৫৪. আল্লাহর বান্দাদের কষ্ট দেয়া৷
৫৫. অহংকার ও গৌরব প্রকাশে টাখনুর নিচে পোশাক পরা৷
৫৬. পুরুষের স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় পরিধান করা৷
৫৭. মনিবের কাছ থেকে গোলামের পলায়ন বা বৈধ কর্তৃপক্ষকে অস্বীকার করা৷
৫৮. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু-পাখি যবেহ করা৷
৫৯. যে পিতা নয়, তাকে জেনে- শুনে পিতা বলে পরিচয় দেয়া৷
৬০. ঝগড়া ও বাদানুবাদ করা৷
৬১. প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অন্যকে না দেয়া৷
৬২. মাপে এবং ওজনে কম দেয়া৷
৬৩. আল্লাহর আজাব ও গজব সম্পর্কে উদাসীন হওয়া৷
৬৪. আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া৷
৬৫. বিনা ওজরে জামায়াত ত্যাগ করা এবং একাকী নামাজ পড়া৷
৬৬. ওজর ছাড়া জুমআ এবং জামায়াত ত্যাগ করার ওপর অটল থাকা৷
৬৭. উত্তরাধিকারীদের মধ্যে শরীয়ত বিরোধী ওসিয়ত করা৷
৬৮. ধোঁকাবাজি, ছলচাতুরি, প্রতারণা করে মানুষ ঠকানো৷
৬৯. মুসলমানদের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দাগিরি করা এবং তাদের গোপনীয় বিষয় অন্যদের কাছে প্রকাশ করে দেয়া৷
৭০. রাসূলের সাহাবাদের কাউকে গালি দেয়া৷

আল্লাহ আমাদের এই সকল কবিরা গুনাহ থেকে হেফাজত করুন।আমিন

১০০ টি কবিরা গুনাহ…!

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

কবিরা গুনাহ কি?

কবীরা গুনাহ বলা হয় ঐ সকল বড় বড় পাপকর্ম সমূহকে যেগুলোতে নিন্মোক্ত কোন একটি বিষয় পাওয়া যাবে:
যে সকল গুনাহের ব্যাপারে ইসলামে শরীয়তে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
যে সকল গুনাহের ব্যাপারে দুনিয়াতে নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগের কথা রয়েছে।
যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা রাগ করেন।
যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ফেরেশতা মণ্ডলী লানত দেন।
যে কাজের ব্যাপারে বলা হয়েছে, যে এমনটি করবে সে মুসলমানদের দলভুক্ত নয়।
কিংবা যে কাজের ব্যাপারে আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
যে কাজে দ্বীন নাই, ঈমান নাই ইত্যাদি বলা হয়েছে।
যে ব্যাপারে বলা হয়েছে ্‌এটি মুনাফিকের আলামত বা মুনাফিকের কাজ।
অথবা যে কাজকে আল্লাহ তায়ালা সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় করা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
১০০টি কবীরা গুনাহ:
আল্লাহর সাথে শিরক করা
নামায পরিত্যাগ কর
পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া
অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা
পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করা
যাদু-টোনা করা
এতীমের সম্পদ আত্মসাৎ করা
জিহাদের ময়দান থেকে থেকে পলায়ন করা
সতী-সাধ্বী মু‘মিন নারীর প্রতি অপবাদ দেয়া
রোযা না রাখা
যাকাত আদায় না করা
ক্ষমতা থাকা সত্যেও হজ্জ আদায় না করা
যাদুর বৈধতায় বিশ্বাস করা
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া
অহংকার করা
চুগলখোরি করা (ঝগড়া লাগানোর উদ্দেশ্যে একজনের কথা আরেকজনের নিকট লাগোনো)
আত্মহত্যা করা
আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা
অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ ভক্ষণ করা
উপকার করে খোটা দান করা
মদ বা নেশা দ্রব্য গ্রহণ করা
মদ প্রস্তুত ও প্রচারে অংশ গ্রহণ করা
জুয়া খেলা
তকদীর অস্বীকার করা
অদৃশ্যের খবর জানার দাবী করা
গণকের কাছে ধর্না দেয়া বা গণকের কাছে অদৃশ্যের খবর জানতে চাওয়া
পেশাব থেকে পবিত্র না থাকা
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামে মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করা
মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করা
মিথ্যা কথা বলা
মিথ্যা কসম খাওয়া
মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করা
জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া
সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া
মানুষের গোপন কথা চুপিসারে শোনার চেষ্টা করা
হিল্লা তথা চুক্তি ভিত্তিক বিয়ে করা।
যার জন্যে হিলা করা হয়
মানুষের বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা
মৃতের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা
মুসলিম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা
মুসলিমকে গালি দেয়া অথবা তার সাথে লড়ায়ে লিপ্ত হওয়া
খেলার ছলে কোন প্রাণীকে নিক্ষেপ যোগ্য অস্ত্রের লক্ষ্য বস্তু বানানো
কোন অপরাধীকে আশ্রয় দান করা
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা
ওজনে কম দেয়া
ঝগড়া-বিবাদে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা
ইসলামী আইনানুসারে বিচার বা শাসনকার্য পরিচালনা না করা
জমিনের সীমানা পরিবর্তন করা বা পরের জমি জবর দখল করা
গীবত তথা অসাক্ষাতে কারো দোষ চর্চা করা
দাঁত চিকন করা
সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে মুখ মণ্ডলের চুল তুলে ফেলা বা চুল উঠিয়ে ভ্রু চিকন করা
অতিরিক্ত চুল সংযোগ করা
পুরুষের নারী বেশ ধারণ করা
নারীর পুরুষ বেশ ধারণ করা
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কামনার দৃষ্টিতে তাকানো
কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা
পথিককে নিজের কাছে অতিরিক্ত পানি থাকার পরেও না দেয়া
পুরুষের টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পোশাক পরিধান করা
মুসলিম শাসকের সাথে কৃত বাইআত বা আনুগত্যের শপথ ভঙ্গ করা
ডাকাতি করা
চুরি করা
সুদ লেন-দেন করা, সুদ লেখা বা তাতে সাক্ষী থাকা
ঘুষ লেন-দেন করা
গনিমত তথা জিহাদের মাধ্যমে কাফেরদের নিকট থেকে প্রাপ্ত সম্পদ বণ্টনের পূর্বে আত্মসাৎ করা
স্ত্রীর পায়ু পথে যৌন ক্রিয়া করা
জুলুম-অত্যাচার করা
অস্ত্র দ্বারা ভয় দেখানো বা তা দ্বারা কাউকে ইঙ্গিত করা
প্রতারণা বা ঠগ বাজী করা
রিয়া বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে সৎ আমল করা
স্বর্ণ বা রৌপ্যের তৈরি পাত্র ব্যবহার করা
পুরুষের রেশমি পোশাক এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য পরিধান করা
সাহাবীদের গালি দেয়া
নামাযরত অবস্থায় মুসল্লির সামনে দিয়ে গমন করা
মনিবের নিকট থেকে কৃতদাসের পলায়ন
ভ্রান্ত মতবাদ জাহেলী রীতিনীতি অথবা বিদআতের প্রতি আহবান করা
পবিত্র মক্কা ও মদীনায় কোন অপকর্ম বা দুষ্কৃতি করা
কোন দুষ্কৃতিকারীকে প্রশ্রয় দেয়া
আল্লাহর ব্যাপারে অনধিকার চর্চা করা
বিনা প্রয়োজনে তালাক চাওয়া
যে নারীর প্রতি তার স্বামী অসন্তুষ্ট
স্বামীর অবাধ্য হওয়া
স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর অবদান অস্বীকার করা
স্বামী-স্ত্রীর মিলনের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করা
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাদ সৃষ্টি করা
বেশী বেশী অভিশাপ দেয়া
বিশ্বাস ঘাতকতা করা
অঙ্গীকার পূরণ না করা
আমানতের খিয়ানত করা
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া
ঋণ পরিশোধ না করা
বদ মেজাজি ও এমন অহংকারী যে উপদেশ গ্রহণ করে না
তাবিজ-কবজ, রিং, সুতা ইত্যাদি ঝুলানো
পরীক্ষায় নকল করা
ভেজাল পণ্য বিক্রয় করা
ইচ্ছাকৃত ভাবে জেনে শুনে অন্যায় বিচার করা
আল্লাহ বিধান ব্যতিরেকে বিচার-ফয়সালা করা
দুনিয়া কামানোর উদ্দেশ্যে দীনী ইলম অর্জন করা
কোন ইলম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জানা সত্যেও তা গোপন করা
নিজের পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে দাবী করা
আল্লাহর রাস্তায় বাধা দেয়া
কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার মর্যাদাঃ
১. মহান আল্লাহ বলেন:
إِن تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَنُدْخِلْكُم مُّدْخَلًا كَرِيمًا
“যেগুলো স¤পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের (ছাট) গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।” (সূরা নিসা: ৩১)
২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:
الصلوات الخمس . والجمعة إلى الجمعة . ورمضان إلى رمضان . مكفرات ما بينهن إذا اجتنب الكبائر
“পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুমআ থেকে আরেক জুমআ এবং এক রামাযান থেকে আরেক রামাযান এতদুভয়ের মাঝে সংঘটিত সমস্ত পাপরাশীর জন্য কাফফারা স্বরূপ যায় যদি কবীরা গুনাহ সমূহ থেকে বেঁচে থাকা যায়।” (মুসলিম)

কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে জানতে হবে ও মানতে হবে

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

কোরান শরিফে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন – তোমরা যদি সেই মহা পাপ সমূহ থেকে বিরত থাকতে পারো, যাহা হইতে তোমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে, তাহলেই আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবো এবং তোমাদেরকে সন্মানপ্রদ গন্তব্যস্থানে প্রবিষ্ট করবো। (সূরা নিসা-আয়াত৩১)

বর্ণীত আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা নিজ দয়ায় এবং নিজ দায়িত্বে ঐব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর জামিন হয়েছেন, যে ব্যক্তি কবিরা গুনাহ সমূহ থেকে নিজেকে মুক্ত রেখেছ, তাদের জন্য। কেননা সগিরা গুনাহগুলো জুমা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রমজানের রোজা ইত্যাদী দ্বারা মাফ হয়ে যায়। হাদীস শরীফে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন,পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং এক জুমা থেকে অন্য জুমা ও এক রমজান থেকে অন্য রমজান-মধ্যবর্তি সময়ের সগিরা গুনাহ সমূহের জন্য কাফফারা স্বরূপ, যদি বান্দা কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে। অর্থাৎ বান্দা যদি নিজেকে কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখে, তবে এক নামাজ থেকে দ্বিতীয় নামাজের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কোন সগিরা হয়ে থাকলে তা দ্বিতীয় নামাজ আদায়ের দ্বারাই মাফ হয়ে যাবে। এমনিভাবে জুমা ও রমজানের দ্বারাও তার মধ্যবর্তি গুনাহ মাফ হবে। (মুসলিম শরিফ)

এ থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাথে আরো একটি বিষয় দ্রষ্টব্য যে – উলামায়ে কিরামের ভাষ্যানুযায়ি, তাওবা ও ইস্তেগফারের পর কবিরা গুনাহ থাকেনা অর্থাৎ মাফ হয়ে যায় তেমনিভাবে সগিরা গুনাহ ও বার বার করার দ্বারা সগিরা গুনাহ থাকেনা বরং তা কবিরা গুনাহে রূপান্তরীত হয়ে যায়। সুতরাং কবিরা গুনাহ থেকে বাঁচতে হলে প্রথমত কবিরা গুনাহকে জানতে হবে এবং সেগুলো চিনতে হবে। কেননা না চিনলে তা থেকে নিজেকে বাঁচাবো কিভাবে, আর সাথে সাথে সকল সগিরা গুনাহ থেকেও নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। এ প্রসংগেই হযরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,মানুষ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ভাল কাজের ব্যপারে প্রশ্ন করতো, অথচ আমি মন্দ কাজের ব্যপারে জেনে নিতাম,এ ভয়ে যে খারাপ যেন আমাকে না পেয়ে বসে।

অনেকেই মনে করে থাকেন যে কবিরা গুনাহ শুধুমাত্র সাতটি, যা হাদীসে কাবায়েরে (কবিরা গুনাহ সম্পর্কিত হাদীস) উল্লেখ আছে। কিন্তু এ ধারণাটি সঠিক নয়। কেননা এ সাতটি কাজ কবিরা গুনাহ ঠিকই, কিন্তু এ হাদীসের মধ্যে কবিরা গুনাহ কে এ সাতটির মধ্যে সিমাবদ্ধ করা হয়নি। অর্থাৎ এ হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সাতটির মধ্যে কবিরা গুনাহকে সিমাবদ্ধ করেননি, সাতটি ধ্বংসাত্মক কবিরা গুনাহের বর্ণনা দিয়েছেন মাত্র। আল্লামা শামছুদ্দীন যাহবী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন,হাদীসে কাবায়ের এর সাতটি গুনাহের মধ্যে কবিরা গুনাহের সিমাবদ্ধতা নেই। শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাহমাতুল্লাহ ও অন্যান্য উলামায়ে কিরাম বলেন, “কবীরা গুনাহ হল প্রত্যেক ঐ গুনাহ যার জন্য দুনিয়াতে শাস্তির বিধান রয়েছে অথবা আখিরাতে শাস্তির ধমকি বা হুসিয়ারি দেয়া হয়েছে” আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাহমাতুল্লাহ আলাইহি একটু বাড়িয়ে এও বলেছেন, যে গুনাহের জন্য ঈমান চলে যাওয়ার ধমকি এসেছে কিংবা লানত (বদ দোয়া) ইত্যাদী করা হয়েছে তাও কবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। আর এ কবীরা গুনাহকে উলামায়া কিরামগন চিহ্নিত করেছেন নিন্মরুপেঃ-

১- আল্লাহ তাআলার সাথে শিরক করা,

২- মানুষ হত্যা কর,

৩- যাদু করা (ভান, টোনা মেরে মানুষের ক্ষতি করা)

৪- নামাজ না পড়া,

৫- জাকাত আদায়ে অস্বিকার করা,

৬- কোন বৈধ কারণ ছাড়া রমজানের রোজা না রাখা,

৭- শক্তি ও সামর্থ থাকা সত্বেও হজ্ব না করা,

৮- পিতা মাতার অবাধ্য হওয়া,

৯- স্বজনদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা এবং আত্মীয়তা ছিন্ন করা,

১০- জিনা বা ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়া,

১১- সমকামিতা বা মহিলার পেছন পথে সংগম করা,

১২- সুদ খাওয়া,

১৩- এতিমের সম্পদ ভক্ষণ (ভোগ) করা,

১৪- আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সাঃ এর উপর মিথ্যা আরোপ করা,

১৫- রাষ্ট্র প্রধান কতৃক প্রজাদের সম্পদ ও অধিকার আত্মসাত এবং প্রজাদের উপর অত্যাচার করা,

১৬- অহংকার,

১৭- মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়া,

১৮- মদ পান করা,

১৯- জুয়া খেলা,

২০- সতি সাধবী মহিলার উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া,

২১- চুরি-ডাকাতি করা,

২২- মিথ্যা বলা, মিথ্যা কসম বা শপথ,

২৩- জুলুম বা অত্যাচার করা,

২৪- হারাম মাল ভক্ষণ এবং যে কোন ভাবে তা ব্যবহার করা,
২৫- আত্মহত্যা করা,
২৬- আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামী বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত বিধানে বিচার কার্য সম্পাদন করা,
২৭- ঘুষ খাওয়া এবং ঘুষ নিয়ে কারো পক্ষে রায় দেয়া,
২৮- পোষাক পরিচ্ছেদ, চলা ফেরা ইত্যাদীতে নারী পুরুষের রূপ ধারণ করা কিংবা পুরুষ নারীর রূপ ধারণ করা
২৯- দু জনের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টির চেষ্টা এবং (দাইয়ূছ) যে নিজের পরিবারের অপকর্ম কে উদারমনা হয়ে সমর্থন করে
৩০- হারামকে হালাল করা (স্ত্রী কে তিন তালাক দেয়ার পর স্বামির জন্য ঐ স্ত্রী হারাম হয়ে যায়। কিন্তু ঐ মহিলার দ্বিতীয় কোথাও স্বাভাবিক বিয়ে হওয়ার পর যদি ঐ স্বামি তাকে তালাক দেয় তবে এই মহিলা তার প্রথম স্বামির জন্য হালাল হয়।পূণরায় বিয়ে করে তাকে গ্রহন করতে পারে। অথচ এখন দেখা যায় স্বামি স্ত্রীকে তালাক দেয়ার চুক্তি ভিত্তিক হিল্লা বিয়ে দেয়া হয় কিছু সময়ের জন্য। যখন চুক্তি মাফিক চুক্তি বিয়ের স্বামি মহিলাকে তালাক দেয়,প্রথম স্বামি পূণঃ বিয়ে পড়ে তাকে গ্রহন করে। এটা শরিয়ত সন্মত নয়। এখানে চুক্তি ভিত্তিক স্বামি হল হালাল কারী আর প্রথম স্বামি হল যার জন্য হালাল করা হয়েছে। এখানে উভয়েই এই কবিরা গুনায় সমান অংশিদার।)

৩১- প্রস্রাব থেকে পরিচ্ছন্ন না থাকা (এটা খৃষ্টান্দের একটি সংস্কৃতি)

৩২- চতুস্পদ প্রাণীর মুখে লোহা দিয়ে চিহ্ন দেয়া

৩৩- দুনিয়া হাসিলের উদ্দ্যেশ্যে দ্বিনী এলেম শিক্ষা করা এবং এলেম শিক্ষা করে তা প্রচার ও প্রকাশ না করে লুকিয়ে রাখা

৩৪- গচ্ছিত মাল বা আমানতের খেয়ানত করা,

৩৫- কারো উপর দয়া,অনুগ্রহ,দান বা উপকার করে খোঁটা দেয়া,

৩৬- তাক্বদীর বা ভাগ্য কে অস্বিকার করা,

৩৭- চুপি চুপি লুকিয়ে মানুষের গোপন কথা শ্রবণ করা,

৩৮- চোগলখোরি বা বিবাদ সৃষ্টির লক্ষ্যে এক জনের কথা অন্যের নিকট আদান প্রদান করা,

৩৯- কাউকে লানত বা গালিগালাজ করা,

৪০- অঙ্গীকার,ওয়াদা বা চুক্তি ভঙ্গ করা,

৪১- জ্যোতিষি গনক বা যাদুকরকে বিশ্বাস করা,

৪২- স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হওয়া,

৪৩- বিপদের সময় চিৎকার করে কান্নাকাটি করা,বুক বা মুখ চাবড়ানো,পরিধেয় পোষাক ছিঁড়ে ফেলে,মাথা ন্যড়া করা,চুল ছিঁড়ে ফেলা,নিজেদের জন্য ধ্বংশ ইত্যাদী ডেকে বিলাপ করা,

৪৪- বিদ্রোহ করা বা অতিরঞ্জিত করা,

৪৫- দুর্বল অধিনস্ত দাস দাসী, স্ত্রী কিংবা কোন প্রাণীর উপর হাত উঠানো বা প্রহার করা,

৪৬- প্রতিবেশী কে যেকোন ভাবে কষ্ট দেয়া বা গালি দেয়া

৪৭- স্বর্ণ কিংবা রৌপ্যের পাত্রে আহার বা পান করা এবং পুরূষ রেশমি কাপড় (সিল্ক) বা স্বর্ণ পরিধান করা

৪৮- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে প্রাণী জবাই করা যেমন শয়তানের নামে যাদু করার জন্য,মূর্তির নামে,পীর সাহেবের নিয়তে ইত্যাদী,

৪৯- জেনে শুনে নিজ পিতাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পিতা বলে মানা বা দাবী করা,

৫০- ঝগড়া বিবাদ,কারো সাথে নিজের ব্যাক্তিত্ত্ব প্রকাশ বা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দ্যেশ্যে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া

৫১- ধোকাবাজী করা ও ঠকানো এবং মাপে কম দেয়া (এটা খুব বেশি দেখা যায় আমাদের দেশের গোশ্ত বিক্রেতাদের মাঝে। এছাড়া অন্যরা ও করে থাকে।)

৫২- আল্লাহ তাআলার পাকড়াও ও হস্তক্ষেপ থেকে নিশ্চিন্ত ও নির্ভয় হওয়া,

৫৩- মৃত প্রাণীর গোস্ত এবং প্রাণীর রক্ত ও শুকরের গোস্ত খাওয়া,

৫৪- কোন ওজর (শরীয়ত স্বিকৃত সমস্যা) ছাড়া জুমার নামাজ বা জামাত ছেড়ে দিয়ে একাকী নামাজ আদায় করা

৫৫- আল্লাহ তাআলার রহমত ও অনুগ্রহ থেকে নৈরাশ হওয়া

৫৬- কোন মুসলমান কে কাফির বলা

৫৭- মুসলমানদের মধ্যে গোয়েন্দাগিরী ও তাদের গোপনীয়তা সম্পর্কে অবগত হওয়া (বিবাদ সৃষ্টির লক্ষ্যে)

৫৮- সাহাবাদের কাউকে গালি দেয়া,

৫৯- বিচারক কার্যে অনিয়ম করা,

৬০- বংশ নিয়ে একে অপরকে তিরস্কার বা ধিক্কার দেয়া বা হেয় প্রতিপন্ন করা,

৬১- মৃত ব্যাক্তির উপর চিৎকার করে আহাজারি করা, বুক চাবড়িরা, বুক চাবড়িয়ে জামা কাপড় ছিড়ে বিলাপ করা,

৬২- রাস্তার চিহ্ন বা মাইলফলক সরিয়ে ফেলা (মিটিয়ে দেয়া)

৬৩- কোন অসৎকাজ প্রতিষ্ঠা কিংবা মানুষকে পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করা,

৬৪- মহিলারা নিজের চুলের সাথে নকল চুল মিলানো এবং চেহারার লোম ইত্যাদী উঠানো সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য,

৬৫- কোন ধাতব বা ধারাল বস্তু অন্যের দিকে উঁচু করা বা আঘাতের লক্ষ্যে নিশানা বানানো,

৬৬- পবিত্র হারাম শরিফে (মক্কায়) বা হারামের সিমানার মধ্যে অন্যায় অত্যাচারে লিপ্ত হওয়া।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেনঃ-

১- যে ব্যক্তি কারো স্ত্রীকে বা দাস কে স্বামি ও মালিকের বিরুদ্বে উস্কে দিল সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়,

২- ভাইয়ের সাথে এক বৎসর সম্পর্ক ছিন্ন রাখা তাকে হত্যা করার সমতুল্য,

৩- যে ব্যক্তির সুপারিশে আল্লাহ প্রদত্ত কোন শাস্তি রহিত হল সে যেন একাজ দ্বারা আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলো,

৪- তোমরা মুনাফেক্বকে (সাইয়েদুনা) আমাদের নেতা বলোনা। মুনাফেক্বকে নেতা বললে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন

৫- যে ব্যক্তি বিনা অনুমতিতে কারো ঘরে উঁকি মেরে দেখল,ঐ পরিবারের জন্য তার চক্ষু নষ্ট করে দেয়া বৈধ

৬- যে ব্যক্তি মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করেনা সে আল্লাহ তাআলার প্রতি ও অকৃতজ্ঞ।

উপরোল্লেখিত যে কবিরা গুনাহ গুলোর বর্ণনা পেশ করছি সে গুলো কবিরা গুনাহ হওয়ার পক্ষে কুরান ও হাদীসে একাধিক প্রমান রয়েছে।এখানে এ সংক্ষিপ্ত পরিসরে তা উল্লেখ করা সম্ভব নয়।

আসুন আমরা সবাই যাতে সকল প্রকার কবিরা গুনাহ থেকে হেফাজত থাকতে পারি এবং আমাদের জানা-অজানা সকল গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ্‌ সুবহানাহু তায়ালার নিকট সর্বদায় তওবা করবো এই হোক আমাদের প্রত্যয়।

তবে মনে রাখতে হবে ক্ষমা পাওয়ার আশায় বার বার গোনাহ করা যুক্তিযুক্ত নয়, বরং এরূপ ধারণা করাও এক প্রকার স্পর্ধা ও মহাপাপ। তবে কৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া এবং তওবা করাই হচ্ছে মুমিনের করণীয়। তাই ক্ষমা প্রার্থনায় দেরী করতে নেই। যে দেরী করে, তাকে আল্লাহ পাক অপছন্দ করেন, আর যে অনুতপ্ত হয়ে অনতি বিলম্বে ক্ষমা প্রার্থনা করে আল্লাহ পাক তাকে অত্যন্ত পছন্দ করে থাকেন। হাদীস বিশারদগণ উল্লেখ করেছেন, গোনাহ করে ক্ষমা প্রার্থনায় বিলম্ব করা আরেকটি মহাপাপ আর গোনাহ করে সাথে সাথে ক্ষমা প্রার্থনা করা, আল্লাহর দরবারে দীনতা-হীনতা প্রকাশ করা ও নিজেকে অপরাধী হিসেবে পেশ করা মুক্তির অন্যতম উপায়। আল্লাহকে ভয় করা চাই। তবে তার দয়া থেকে নিরাশ হতে নেই। কেননা আল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশা-ভরসার স্থল নেই। বান্দার এরূপ বিশ্বাস তার ক্ষমার পথ সুগম করে এবং উন্নতির পথ সহজ ও প্রশস্ত করে। এরূপ ভয় ও আশার মাঝখানে ঈমান অবস্থান করে বলে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মত প্রকাশ করেছেন।

আল্লাহ্‌ যেনো আমাদের সবাইকে সার্বিক হেফাজত করেন এবং সকল প্রকার গুনা থেকে রক্ষা করে আমাদের ঈমানকে সুদৃঢ় করেন, আমীন।